বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে আজ এক নতুন আলো ফোটার পূর্বাভাস সুস্পষ্ট। বহুদিন ধরে জমে থাকা হতাশা, দুঃশাসন, বিভাজন আর মূল্যবোধের অবক্ষয়ের মাঝে—জনগণের হৃদয়ে এখন ভর করছে পরিবর্তনের আশা। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রে যে নেতৃত্ব উঠে আসছে, তিনি আর কেউ নন—ডা. শফিকুর রহমান। আর যে শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার সম্ভাবনায় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান, সেটি হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ও তার নেতৃত্বে দেশ প্রেমিক ঐক্যবদ্ধ জোট।
আমার বিশ্লেষণে এই বাস্তবতা কল্পনা নয়, এটি সময়ের অনিবার্য দাবির প্রতিফলন।
বিদেশি কূটনৈতিক অঙ্গনে যে নীরব আলোচনার ঢেউ বইছে, দেশের অভ্যন্তরে জনগণের অভূতপূর্ব সাড়া, দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক দলের ঐক্য এবং দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে ওঠা জামায়াতে ইসলামির সুসংগঠিত ভিত্তি—এই চারটি শক্তি মিলে বাংলাদেশকে একটি নতুন ইতিহাসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।
৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিজয়কে অনেকেই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখলেও, আমি তা দেখি এক বৃহত্তর রাজনীতির প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এটি ছিল জনমানুষের গহীনে লুকিয়ে থাকা এক আদর্শের পুনর্জাগরণ। যে আদর্শ বহু বাধা, বহু র*ক্ত ও বহু মিথ্যা অপবাদ পেরিয়ে আজ আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
এই বাস্তবতা থেকে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি: আল্লাহর ইচ্ছায়, যদি ভিন্ন কোনো অশুভ কৌশল পর্দার আড়াল থেকে বাস্তবায়িত না হয়, তবে বাংলাদেশে সরকার গঠন করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ও ঐক্যবদ্ধ জোট, এবং ডা. শফিকুর রহমান হবেন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
এই নেতৃত্ব হবে এমন এক নেতৃত্ব—যেখানে আত্মমর্যাদা, ন্যায়বিচার ও শাসনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। একটি কল্যাণভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের যে স্বপ্ন আমরা বহুদিন ধরে দেখে এসেছি, তা এবার বাস্তব রূপ পেতে চলেছে।
আমি মনে করি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির নেতৃত্বাধীন সরকার যেসব মৌলিক বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে, সেগুলো হলো:
রাষ্ট্রের সর্বস্তর থেকে দুর্নীতি উপড়ে ফেলা
প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া
এই তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়েই একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে—যেখানে শাসন হবে জবাবদিহিমূলক, উন্নয়ন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, আর নেতৃত্ব হবে নৈতিকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি যা দেখছি, অনুভব করছি এবং বিশ্লেষণ করছি—তা-ই তুলে ধরেছি।
আমরা একটি সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। সামনে হয়তো অজানা চ্যালেঞ্জ আসবে, তবে সম্ভাবনার দুয়ারও খুলে গেছে। এই সম্ভাবনার কেন্দ্রে যদি একজন যোগ্য, প্রজ্ঞাবান, চরিত্রবান ও নেতৃত্বদানে সক্ষম ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হন—আর তিনি যদি ডা. শফিকুর রহমান হন, তবে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সত্যিই নতুন একটি যুগে প্রবেশ করবে।
সরকার গঠন করবে জামায়াতে ইসলামি, আর জাতিকে পথ দেখাবেন ডা. শফিকুর রহমান—এই বিশ্বাস আজ আর কল্পনা নয়, এটি সময়েরই দাবি।
(ড. ফয়জুল হক)