কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার (গুচ্ছগ্রাম) এলাকায় টিউবওয়েলের পাশে পড়ে থাকা এক অজ্ঞাতপরিচয় নবজাতক কন্যাশিশুকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় গৃহবধূ আসমাউল হুসনা আশা জানান, প্রতিদিনের মতো সকালে তিনি বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যান। এসময় টিউবওয়েলের পাশে একটি নবজাতক মেয়েশিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। শিশুটির শরীরে কোনো কাপড় ছিল না, এবং সে কান্না করছিল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে ডাকেন। পরে স্বামী মিলন হোসেন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে শিশুটিকে ঘরে তুলে নেন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ভূরুঙ্গামারী থানায় জানানো হয়। পুলিশের পরামর্শে নবজাতকটিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, “শিশুটির বয়স আনুমানিক ৬-৭ দিন। উদ্ধারের সময় শিশুটি দুর্বল ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। শারীরিকভাবে সে এখন স্থিতিশীল রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শিশুটির প্রকৃত অভিভাবককে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো অভিভাবক না পাওয়া যায়, তবে শিশুটিকে ঢাকার ছোট মনি নিবাসে পাঠানো হবে। তবে দত্তক নেওয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হতে হবে।”
এদিকে নবজাতকটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন শিশুটির প্রথম সন্ধানদাতা দম্পতি মিলন হোসেন ও আসমাউল হুসনা আশা। তারা জানান, “আমাদের ঘরে এখনো কোনো সন্তান আসেনি। অনেক বছর ধরে আল্লাহর কাছে একটি সন্তানের জন্য দোয়া করেছি। হয়তো এই শিশুটিকে তিনিই আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন। আমরা এই শিশুটিকে নিজের সন্তান হিসেবেই লালন-পালন করতে চাই।”
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান, “ঘটনার পরপরই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। শিশুটির ভবিষ্যতের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের ধারণা, কেউ গোপনে শিশুটিকে ফেলে রেখে গেছে। তবে কে বা কারা এমন নিষ্ঠুর কাজ করেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।